২৩ আগ, ২০২৪

১৯৭১ হতে ২০১৪ বাংলাদেশ

 BBC News, বাংলা



স্বাধীনতার ৫০ বছর: বাংলাদেশের ইতিহাসে মোড় ঘোরানো ১৪টি ঘটনা যেভাবে ঘটেছিল

১৬ ডিসেম্বর ২০২১

বাংলাদেশের স্বাধীনতার লাভের পর থেকে গত ৫০ বছরে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যেগুলো দেশটির রাজনীতি এবং সমাজে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক বদল করেছে। এসব ঘটনার ইতিবাচক এবং নেতিবাচক - দুধরণের প্রভাব রয়েছে।


উনিশ'শ পঁচাত্তর সালে সংবিধান পরিবর্তন করে বাকশাল গঠন থেকে শুরু করে ২০১৮ সালে বিতর্কিত সাধারণ নির্বাচন - সব ঘটনারই রয়েছে নানা ধরণের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ।


গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজে যেসব ঘটনা গভীর দাগ কেটেছে সেখানে থেকে ১৪টি বিষয় তুলে ধরা হল:


১.বাকশাল গঠন


শেখ মুজিবুর রহমান

ছবির উৎস,Getty Images

ছবির ক্যাপশান,শেখ মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশের স্বাধীনতা মাত্র চার বছরের মাথায় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা চালু করা হয়। সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল।


বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ নামে একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে এই সরকার পদ্ধতি চালু করা হয়। ফলে এটি পরিচিত হয়ে উঠে বাকশাল হিসেবে।


এই পদ্ধতিতে দেশের অন্যসব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়। স্বাধীনতার কয়েক বছরের মধ্যেই এই সরকার পদ্ধতি ছিল গণতন্ত্রের প্রতি বিরাট আঘাত। এজন্য দেশে -বিদেশে বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান।


২.শেখ মুজিব হত্যা


পরিবারের সদস্যসহ শেখ মুজিবুর রহমান

ছবির উৎস,ARCHIVE PHOTO

ছবির ক্যাপশান,পরিবারের সদস্যসহ শেখ মুজিবুর রহমান

উনিশ'শ পঁচাত্তর সালের ১৫ই অগাস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যেকে হত্যা করা হয়। একদল সেনা কর্মকর্তা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল।


এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী দলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। বহু বছর বিদেশে নির্বাসনে থাকতে হয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানাকে।


মুজিব হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ডানপন্থী রাজনীতি খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসে। প্রতিষ্ঠিত হয় রাজনীতির আরেকটি ধারা। এর পক্ষে-বিপক্ষে নানা সমালোচনা রয়েছে।


৩. নভেম্বর ১৯৭৫: অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান ও জেল হত্যা


বাম থেকে- খালেদ মোশারফ, কর্নেল তাহের এবং জিয়াউর রহমান।

ছবির ক্যাপশান,বাম থেকে- খালেদ মোশারফ, কর্নেল তাহের এবং জিয়াউর রহমান।

শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তা তৈরি হয় তার ফলশ্রুতিতে ৩রা নভেম্বর সেনাবাহিনীর আরেকটি অংশ পাল্টা অভ্যুত্থান করে। মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সে পাল্টা অভ্যুত্থান হয়।


শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতি হলেও সব কিছুর কলকাঠি নাড়ছিল হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সেনা কর্মকর্তারা। তখন সেনাবাহিনীতে চেইন অব কমান্ড কার্যত ভেঙ্গে পড়েছিল। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে আসে ৩রা নভেম্বরের অভ্যুত্থান।


এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং বন্দী করা হয় সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে।


মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফের নেতৃত্বে যখন এই অভ্যুত্থান সংগঠিত হচ্ছিল তখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগের চার সিনিয়র নেতাকে কারাগারের ভেতরেই গুলি করে হত্যা করা হয়। তেসরা নভেম্বরের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যাতে ক্ষমতায় ফিরতে না পারে সেজন্য চারজন সিনিয়র নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।


কিন্তু খালেদা মোশাররফের এই অভ্যুত্থান স্থায়ী হয়েছিল মাত্র চারদিন। সাতই নভেম্বর পাল্টা আরেকটি অভ্যুত্থানে নিহত হন খালেদা মোশাররফ এবং আরো কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা। সে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেন সৈনিকরা। এরপর ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন জিয়াউর রহমান।


৪. জিয়ার ক্ষমতা গ্রহণ ও হত্যাকাণ্ড


জিয়াউর রহমান

ছবির উৎস,Getty Images

ছবির ক্যাপশান,জিয়াউর রহমান

তেসরা নভেম্বর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে খন্দকার মোশতাককে ক্ষমতাচ্যুত করেন মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফের নেতৃত্বে অফিসাররা। উনিশ'শ পঁচাত্তর সালের ৫ই নভেম্বর ক্ষমতাচ্যুত হন খন্দকার মোশতাক আহমেদ। এরপর ৬ই নভেম্বর রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম।


কিন্তু ৭ই নভেম্বর পাল্টা অভ্যুত্থানের পরে বন্দীদশা থেকে মুক্ত হয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রে আসেন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান। আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম একধারে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ছিলেন। এসময় জিয়াউর রহমান ছিলেন উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন।


কিন্তু এক বছর পরে ১৯৭৬ সালের ১৯শে নভেম্বর রাষ্ট্রপতি সায়েমকে সরিয়ে জিয়াউর রহমান নিজেই প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়ে নেন। এর পাঁচ মাস পরেই ১৯৭৭ সালের এপ্রিল মাসে আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে সরিয়ে জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত করেন।


রাষ্ট্রপতি হবার দেড় বছরের মাথায় জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি গঠন করেন।


উনিশ'শ পঁচাত্তর সালের ৭ই নভেম্বরের পাল্টা অভ্যুত্থান তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের জন্য এক বড় আশীর্বাদ হয়ে আসে। এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনীতির খোল-নলচে বদলে দেয়।


জিয়াউর রহমানের গঠিত রাজনৈতিক দল নতুন এক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের প্রতি। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে মধ্য-ডানপন্থী রাজনীতির আবির্ভাব ঘটে।


এক সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের 'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম' এবং 'সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস' এবং 'বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ' যোগ করা হয়। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি স্পষ্টত বিভিন্ন ইসলামপন্থী গোষ্ঠী এবং সাধারণ মানুষকে তুষ্ট করেতে চেয়েছেন।


এছাড়া বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের নামে তিনি নতুন আরেকটি রাজনৈতিক ধারার সৃষ্টি করেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকার সময় সেনা ও বিমানবাহিনীতে দফায়-দফায় অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়। তবে প্রতিটি অভ্যুত্থানের চেষ্টা কঠোর হাতে দমন করেন জিয়াউর রহমান।


উনিশ'শ একাশি সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক অভ্যুত্থানে নিহত হন জেনারেল জিয়াউর রহমান।


৫. এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণ ও পতন


জেনারেল এরশাদ

ছবির উৎস,Getty Images

ছবির ক্যাপশান,ক্ষমতা গ্রহণের পরে ঢাকায় বিদেশি সাংবাদিক পরিবেষ্টিত জেনারেল এরশাদ।

জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর সংবাদপত্রে নানা বিবৃতির মাধ্যমে তৎকালীন সেনাপ্রধান লেফটেনেন্ট জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রাজনীতিতে আসার বাসনা প্রকাশ পেতে থাকে। তবে তিনি খুব তাড়াহুড়ো করেননি। উনিশ'শ বিরাশি সালের ২৪শে মার্চ রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন জেনারেল এরশাদ।


রাজনীতির ক্ষেত্রে জেনারেল এরশাদ অনেকটাই জেনারেল জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করেন। জিয়াউর রহমানের মতো জেনারেল এরশাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ ছিল মধ্য-ডানপন্থী। তিনি সংবিধানে সংশোধনীর মাধ্যমে 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম' যুক্ত করেন।


জেনারেল জিয়া যেভাবে বিএনপি গঠন করেছিলেন, ঠিক তেমনি জেনারেল এরশাদও জাতীয় পার্টি গঠন করেন। জেনারেল এরশাদ ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী সামরিক শাসক।


জেনারেল এরশাদকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। গণআন্দোলনের মুখে জেনারেল এরশাদ ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর ক্ষমতা থেকে সড়ে দাঁড়ান।


৬.উনিশ'শ একানব্বই সালের নির্বাচন


উনিশ'শ একানব্বই সালের নির্বাচনে বিএনপির পোস্টার

ছবির উৎস,Robert Nickelsberg

ছবির ক্যাপশান,উনিশ'শ একানব্বই সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিএনপি জয়লাভ করে।

এই নির্বাচনকে মনে করা হয় বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম 'অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন', যদিও এই নির্বাচনে পরাজিত দল আওয়ামী লীগ 'সূক্ষ্ম কারচুপির' অভিযোগ তুলেছিল।


এটি ছিল বাংলাদেশের পঞ্চম সংসদ নির্বাচন। এর আগে বাংলাদেশে আরো চারটি সংসদীয় নির্বাচন হলেও সেসব নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ ছিল। এই নির্বাচনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।


এর আগের নির্বাচনগুলো দলীয় সরকারের অধীনে পরিচালিত হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।


রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি সাহাবু্দ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সরকারের সাথে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের কেউ নির্বাচনে অংশ নেননি।


৭. খালেদা জিয়ার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী


খালেদা জিয়া: বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী

ছবির উৎস,Robert Nickelsberg

ছবির ক্যাপশান,খালেদা জিয়া: বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী

জেনারেল এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে বিএনপি জয়লাভ করে। দলের প্রধান খালেদা জিয়া উনিশ'শ একানব্বই সালের ২০শে মার্চ বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। রাজনীতিতে আসার ১০ বছরের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী হলেন মিসেস জিয়া।


বিশ্লেষকরা মনে করেন, তখনকার সময়ে বাংলাদেশের মতো একটি রক্ষণশীল সমাজে একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়া বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি ইতিবাচক বার্তা দিয়েছিল।


৮. সংসদীয় ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া


ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবন

ছবির উৎস,AGF

ছবির ক্যাপশান,ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবন

উনিশ'শ একানব্বই সালের ৬ই অগাস্ট বাংলাদেশের সংবিধানে দ্বাদশ সংশোধনী আনা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে সংসদীয় ব্যবস্থার পুন:প্রবর্তন ঘটে।


বাংলাদেশের সংবিধানে যতগুলো সংশোধনী হয়েছে তার মধ্যে দ্বাদশ সংশোধনী হচ্ছে একমাত্র যেখানে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সবগুলো রাজনৈতিক দল একমত হয়েছিল। এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রধান। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী হন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী।


প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রীপরিষদকে জাতীয় সংসদের নিকট দায়বদ্ধ করা হয়। এছাড়া জাতীয় সংসদের সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান চালু করা হয়।


৯. ১৫ই ফেব্রুয়ারি নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার


হাবিবুর রহমান

ছবির ক্যাপশান,বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার মাঝামাঝি সময়ে মাগুরা জেলায় একটি উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে নামে। একই সাথে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী।


তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল সেটি সহিংসতায় রূপ নেয়। এক পর্যায়ে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা।


আওয়ামী লীগের তরফ থেকে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না।


রাস্তায় যখন সহিংস আন্দোলন চলছে তখন ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথে এগিয়ে যায় বিএনপি সরকার। আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নে নির্বাচন বর্জন করলে অনেকটা ভোটার-বিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।


ভোটার-বিহীন সে নির্বাচনে জয়লাভের পর আবারো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন খালেদা জিয়া। সে সংসদের প্রথম অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাশ করে সংবিধানে সেটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।


১০. একুশ বছর পর ক্ষমতায়আওয়ামী লীগ


শেখ হাসিনা

ছবির উৎস,Getty Images

ছবির ক্যাপশান,প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যুক্ত হবার পরে ১৯৯৬ সালের জুন মাসে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ ২১ বছরে আবারো ক্ষমতায় ফিরে আসে।


উনিশ'শ পঁচাত্তর সালে শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পরে নানা চড়াই-উতরাই পার করেছে দলটি। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভ বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করেছিল।


শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পরে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তি ভেবেছিল, দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান নেই। কিন্তু তাদের সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করে ১৯৯৬ সালে আবারো ক্ষমতায় ফিরে আসে আওয়ামী লীগ।


১১. এক এগারো ২০০৭


মইন ইউ আহমেদ

ছবির উৎস,Getty Images

ছবির ক্যাপশান,মইন ইউ আহমেদ

দু'হাজার এক সালে বিএনপি সরকার আবারো ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ২০০৭ সালের ২২শে জানুয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারো নতুন সংকট তৈরি হয়। আওয়ামী লীগের অভিযোগ ছিল, নিজেদের পছন্দমতো সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান পাওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স সীমা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।


তীব্র রাজনৈতিক সংকটের মুখে কে এম হাসান প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করলেও সংকট কাটেনি। তখন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ নিজেই প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন। এতে সংকট আরো ঘনীভূত হয়।


এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টিসহ তাদের রাজনৈতিক জোট নির্বাচন বর্জনের ডাক দেয়। কিন্তু তারপরেও ২০০৭ সালের ২২শে জানুয়ারি এক তরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। এনিয়ে আন্দোলন ও সংঘাত আরো তীব্র হয়।


সংঘাতময় এক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি সেনাবাহিনী ইয়াজউদ্দিন আহমেদকে প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করে। রাজনীতিতে সেনা বাহিনীর এই হস্তক্ষেপ করার ঘটনা '১-১১' হিসেবে পরিচিতি পায়।


সেনাবাহিনীর সমর্থনে এবং প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ড. ফখরুদ্দিন আহমদের নেতৃত্ব নতুন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। তখন ধারণা করা হত সেনা প্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ ছিলেন মূল ক্ষমতাধারী।


১২. দু'হাজার আট সালের নির্বাচন ও যুদ্ধাপরাধীর বিচার


মতিউর রহমান নিজামী

ছবির উৎস,Getty Images

ছবির ক্যাপশান,বিচার চলাকালে আদালতে নেবার পথে মতিউর রহমান নিজামী

ড. ফখরুদ্দিনের নেতৃত্বে সরকার প্রায় দুই বছর পর ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করে। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।


নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সরকার কিছুদিনের মধ্যেই ১৯৭১ সালে সংগঠিত মানবতা-বিরোধী অপরাধের বিচার করার উদ্যোগ নেয়। সে জন্য ২০১০ সালের ২৫শে মার্চ ট্রাইব্যুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়।


এই বিচারের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী রাস্তায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করে এবং সরকার বেশ কঠোরভাবে সেটি মোকাবেলা করেছে। জামায়াতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা এই বিচারের জন্য অভিযুক্ত হয়েছিল। জামায়াতে ইসলামীর নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দেবার দাবিতে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার শাহবাগে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে উঠে।


ট্রাইব্যুনালের রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহম্মদ মুজাহিদ, আব্দুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জমানসহ শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। এরপর তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।


১৩. তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল


নির্বাচন

ছবির উৎস,AFP

ছবির ক্যাপশান,২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা হয়েছিল।

দু'হাজারএগারো সালে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। এর আগে বাংলাদেশের আপিল বিভাগ তত্ত্বাবাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সর্ম্পকিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। তবে একই সাথে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ অভিমত দিয়েছিল যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আরও দুটি সংসদ নির্বাচন হতে পারে।


সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাশ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলোপের পর বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এর পর নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের আর কোন সুযোগ রইল না এই ব্যবস্থা বাতিল করে দেবার পর বাংলাদেশে আরো দুটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও সেগুলোর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে দেশে-বিদেশে।


১৪. দু'হাজার চৌদ্দ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন


তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে বিএনপি এবং তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তায় আন্দোলন করলেও তাতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। এ সময় বিএনপির নেতৃত্বে রাজনৈতিক জোট নির্বাচন বর্জন করে।


নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতের মধ্যস্থতায় সমঝোতার চেষ্টাও বিফলে গেছে। শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি একটি একতরফা সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।


ভোটারবিহীন সে নির্বাচন দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। তবে সমালোচিত হলেও সে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থার আরো সুসংসহত করে নিয়েছে।

১৯ আগ, ২০২৪

শেখ হাসিনার অর্থ পাচারে সহায়তা করে রাশিয়া

https://www.kalerkantho.com/online/Court/2024/08/29/1419969

 যুগান্তর ডেস্ক 

 ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৩১ এএম  |  


বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাট করেছেন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধানকারী গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশন।


‘আউস্টেড বাংলাদেশ’স প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা, হার সান সজীব ওয়াজেদ জয় অ্যান্ড নিস টিউলিপ সিদ্দিক এমবেজেলড ৫ বিলিয়ন ডলার্স ফ্রম ওভারপ্রাইজড ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার্স রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট থ্রো মালয়েশিয়ান ব্যাংকস’ শিরোনামে গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রাশিয়ার রোসাটম মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এ অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দিয়েছে। এতে মধ্যস্থতা করেছেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক।


এতে বলা হয়, বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। শেখ হাসিনা এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র অদূরভবিষ্যতে দেশের বিদ্যুতের ২০ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি ভিভিইআর ইউনিট ব্যবহার করে ২০২৪ সালের মধ্যে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি অবশ্যই বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে।


গণমাধ্যমে এমন ইতিবাচক প্রচারণার আড়ালে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন (রোসাটম) থেকে সোভিয়েত আমলের পারমাণবিক চুল্লি কেনার জন্য ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ লোপাট করেছেন শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা।


এর নির্মাণব্যয় তুলনামূলকভাবে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে গোপনে পাঁচ বিলিয়ন ডলার সরিয়ে নিতে সহায়তা করেছে রাশিয়া। মালয়েশিয়ার ওইসব ব্যাংকে রাশিয়ার বিশেষ তহবিল থেকে এ অর্থ এসেছে।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পারমাণবিক খাত নিয়ে কাজ করার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এছাড়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নকশা এবং নির্মাণকাজের দেখাশোনা করতে পারেন-এমন পেশাদার ব্যক্তিও বাংলাদেশে নেই। তবুও বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সই করে এবং রাশিয়াকে কোনো তত্ত্বাবধান ছাড়াই নির্মাণকাজের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দেয়। এর কারণ, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা পাঁচ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন। 


তবে এ প্রকল্পে উচ্চ নির্মাণব্যয় নিয়ে সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন মিডিয়ার রিপোর্ট নানা দিক থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছে। লোকজন এখন গোটা বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের মতো শীর্ষ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের এতে জড়িত থাকার বিষয়টি সত্যিকার অর্থেই অস্বস্তিকর। 


পুরো বিষয়ে জনগণের আগ্রহ থাকায় এটি আর বিভাগীয় তদন্তে সীমাবদ্ধ না থেকে হাইকোর্ট ডিভিশন পর্যন্ত গড়িয়েছে। তদন্ত কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এ প্রকল্পের দাপ্তরিক কার্যক্রম, ঠিকাদার অনুমোদন বা নিয়োগের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মন্ত্রণালয়ই যদি তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে না থাকে, তাহলে এর দায়িত্ব কে নেবে?’


রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই লন্ডনে শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার রোসাটমের মধ্যে বিতর্কিত মধ্যস্থতা করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। ২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সময় সঙ্গী ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের দাবি, তখন ঢাকা-মস্কোর বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতাও করেছিলেন তিনি। এরপর রাশিয়ার সহায়তায় তিনি বাংলাদেশের চলমান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।


অবশ্য টিউলিপ এ সেবা বিনামূল্যে দেননি! তিনি এর বিনিময়ে খালা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেও মাসিক ভিত্তিতে সম্মানি নিয়েছেন। এর পাশাপাশি ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে টিউলিপের মা শেখ রেহানা এবং শেখ পরিবারের কিছু সদস্য রাশিয়ানদের কাছ থেকে কিক-ব্যাক (গোপনে অর্থ প্রদান) হিসাবে ৩০ শতাংশ অর্থ পেয়েছেন। এ অর্থ তখন গোপনে মালয়েশিয়ার বেশ কয়েকটি অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছিল।


২০০৯ সালে ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানি চালু করেন টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা ও চাচা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক। এ কোম্পানির বিরুদ্ধে ডেস্টিনি গ্রুপ থেকেও ৯০০ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাজ্যে তারা জুমানা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড প্রোপার্টিজ লিমিটেড নামে একটি কোম্পানিও খুলেছে। 


এদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৬৪ মিলিয়ন ডলারের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রকল্পের ৩৩ কর্মকর্তাকে সমন পাঠিয়েছে। রোববার পাঠানো দুদকের নোটিশে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ওই কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। কমিশনের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য নিশ্চিত করেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দুদক আগামী ৬, ৭, ১১, ১২ ও ১৩ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন


৪৯৫ উপজেলায় প্রশাসক নিয়োগ

অপসারণ

৬০ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অপসারণ

উপজেলা

৪৯৩ উপজেলা চেয়ারম্যানকে অপসারণ

টঙ্গী

টঙ্গীতে থানাগেটে ট্রাকে রহস্যজনক আগুন

বাংলাদেশের সংবিধান

কী আছে পঞ্চদশ সংশোধনীতে

৩২৩ পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ

৩২৩ পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ

ইউনূস

ইউনূস সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায় পাকিস্তান

হাইকোর্ট

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ নয়, হাইকোর্টের রুল


৮ আগ, ২০২৪

আওয়ামী লীগ /ছাত্র লীগের ক- পরিকল্পনা #বলির পাঠা সংখ্যা লগু

 ‘র’ ও হাসিনার পরবর্তী পরিকল্পনা কী?

দ্য মিরর এশিয়া


১৬ জুলাই যখন হাসিনা সরকার শিক্ষার্থীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়, তখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সরকারের অনুকূলে চলে যায়। পরবর্তীতে শেখ হাসিনার বিশেষ অনুরোধ ও ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সরাসরি তদারকিতে বাংলাদেশে ‘র’ এর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৪০০ কর্মকর্তা ঢাকায় যান। তাদের ভাষায়, আন্দোলন কাশ্মীরি কায়দায় দমন করে তারা দিল্লি ফেরেন ২৮ জুলাই।


কিন্তু পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে ‘র’ ওয়াকিবহাল ছিল না। তাদের ভাষায়, তারা সিআইএ’র কৌশলের কাছে হেরে যান ৫ আগস্ট। যদিও ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দিল্লি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে নেওয়া নয়। ২ আগস্ট প্লান ‘সি’ এর অংশ হিসেবে এই পরিকল্পনা করে রাখে হাসিনা ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিদ ডোভাল। উল্লেখ্য, ভারত দক্ষিণ এশিয়াকে তার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট অঞ্চল হিসেবে দেখে, ফলে এসব দেশের ব্যাপারে নিরাপত্তা উপদেষ্টার একটা হস্তক্ষেপ থাকে।


‘র’ ৫ আগস্টের পর ১০ আগস্ট সংখ্যালঘুদের সমাবেশের আড়ালে একটি প্রতিবিপ্লব করার পরিকল্পনা করে। তার জন্য বিপুল সংখ্যক ভারতীয় সাংবাদিকও সেদিন ঢাকায় উপস্থিত ছিলেন। সেটি ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় ক্যু পরিকল্পনা করা হয় ১৫ আগস্ট। সেটিও ব্যর্থ হয়। তবে সম্প্রতি দেশে যে আনসার বিদ্রোহের পরিকল্পনা হয়, তা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ। তার সাথে ‘র’ এর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি দ্য মিরর এশিয়া।


ভারতের পরবর্তী পরিকল্পনা কী হতে পারে, তা নিয়ে গেল এক সপ্তাহ ধরে অনুসন্ধান করেছে দ্য মিরর এশিয়া। সম্প্রতি হাসিনাকে সাউথ দিল্লির একটি সরকারি আবাসিকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, হাসিনা বর্তমানে ভারতের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টিলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) সুরক্ষিত একটি ভবনে থাকছেন। অতি সম্প্রতি ভারতের ডজনখানেক হাই-প্রোফাইল মিটিং হয়েছে তার সাথে। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও ‘র’ প্রধান নিজে শেখ হাসিনার দেখভাল করছেন এবং তার সাথে প্রায়ই বৈঠক করছেন।


মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য হাসিনার সাথে নিয়মিত সাক্ষাৎ করছে তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও। নিয়মিত যোগব্যায়ামও করছেন হাসিনা। হাসিনার নতুন বাসভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নিয়োগ দেখে দিল্লিতে কর্মরত এক বাঙালি সাংবাদিক দ্য মিরর এশিয়াকে বলেছেন, হাসিনা দিল্লিতে দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকবেন।


দ্য মিরর এশিয়া নজর রাখছে হাসিনা ও ভারতের পরবর্তী পরিকল্পনার দিকে। এজন্য বাংলাদেশের ওপর নজর রাখেন এমন দুই সাংবাদিক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা, দুজন থিংক ট্যাংকের গবেষক ও সিক্রেট সার্ভিসের একজনের সাথেও কথা বলেছে দ্য মিরর এশিয়া।


জানা গেছে, ভারত এই মুহূর্তে দুই নৌকায় পা রেখে চলতে চায়। প্রথমত, ঢাকার নতুন সরকার ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গতিবিধি নজরদারি করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য কূটনীতিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, তারা জামায়াতে ইসলামীর সাথেও আলোচনা করতে রাজি। তবে জামায়াতের জন্য আলোচনার ‘দরজা’ খুলতে চান না তারা, ‘জানালা’ খুলতে চায়। যেমনটা বলছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা।


জানা গেছে, আপাতত দুটি প্রোজেক্ট দেওয়া হয়েছে। প্রথম প্রোজেক্ট ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর। এই প্রজেক্টের উদ্দেশ্য হলো ইউনূস সরকারের ওপর ভর করেছে শিবির, হেফাজত ও হিযবুত তাহরির- বামপন্থিদের মাধ্যমে এই বয়ান হাজির করানো। সেই সাথে হেফাজত ইসলামের একটি অংশ, যার সাথে ‘র’ এর দীর্ঘদিনের যোগাযোগ, তাদের বোঝানো হচ্ছে ‘ড. ইউনূস সুদখোর, তিনি মার্কিন এজেন্ট, কোনভাবে একজন ভালো মুসলিম নন। বেশ কিছুদিন গেলে এই সরকার সমকামীদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে পারে’। এই গ্রুপকে জামায়াতের সাথে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ঐক্যে না যাওয়ার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


তবে মিশন থেকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, আন্দোলনকারীদের সাথে হিযবুত তাহরীর সংশ্লিষ্টতা ও তাদের ভাবাদর্শ নিয়ে একটি ভয় তৈরি করার দিকে। দ্য মিরর এশিয়া জানতে পেরেছে, ইতিমধ্যে ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী’ তিনজন বামপন্থী সাবেক ছাত্রনেতার সাথে পশ্চিম বাংলায় দিল্লিতে কর্মরত একজন সাংবাদিক দীর্ঘক্ষণ আলাপ করেছেন। তাদের সাথে ভবিষ্যতে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।


এদিকে, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে ‘র’ এর মধ্যে একটি উপ-গ্রুপ করা হয়েছে ‘বাংলা মিশন’ সম্পন্ন করার জন্য। সম্প্রতি চিকেন নেক নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্য ও সেভেন সিস্টার নিয়ে সমন্বয়কদের কারো কারো বক্তব্যকেও আমলে নিয়েছে বাংলাদেশ নিয়ে গঠিত গোয়েন্দা উপ-টিম ‘বাংলা মিশন’। তাদের প্রত্যেকের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে হিন্দি ও ইংরেজিতে অনুবাদ করে ভিক্টর-২ এর টেবিলে দেওয়া হয়েছে। ভিক্টর-২ হলো ‘র’ এর একটি প্রোটোকল, যার কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কিত সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।


অন্যদিকে, আন্দোলনকারী সমন্বয়কদের নিয়ে ও তাদের আদর্শিক ধারণা নিয়ে দিল্লির দুটি ও আসামের একটি  থিংক ট্যাংক গত ২০ দিন ধরে গবেষণা করেছে। তিনটি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, সমন্বয়করা যে দল গঠন করতে যাবে তা হবে একটি ভারতবিরোধী রাজনৈতিক দল। বামপন্থি বৈপ্লবিক ধারণা তারা পোষণ করলেও তাদের সাথে ধর্মের বিরোধ থাকবে না। এই আদর্শের ফলে মূলত দেশের বামপন্থিদের রাজনৈতিক স্পেস একেবারে শূন্য হয়ে যাবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। ফলে তারা বামদের সাথে তরুণদের একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হবে বলে ধারণা করছেন। সে চিন্তা থেকেই ‘র’ বামপন্থি ছাত্র নেতাদের সাথে যোগাযোগ করছে।


এছাড়া সম্প্রতি হয়ে যাওয়া গণঅভ্যূত্থানকে তারা একটি দার্শনিক ও ঐতিহাসিক ভিত্তি দিতে চাইলে বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের একচ্ছত্র বয়ান ক্ষুণ্ন হবে বলে মনে করছেন, যা ঢাকায় ভারতের সফট পাওয়ারকে দুর্বল করে দেবে। এই গণঅভ্যূত্থানের চেতনাকে বৃহত্তর পরিসরে গ্রহণ করা হলে, ‘র’ এর দ্বিতীয় পরিকল্পনা ‘রিসেটেল আওয়ামী লীগ-২০২৫’-ও খুব কঠিন হয়ে যাবে।


দিল্লিভিত্তিক একজন বাংলাদেশ গবেষক দ্য মিরর এশিয়াকে বলছিলেন, হাসিনার অসাধারণ ক্ষমতা আছে কামব্যাক করার। তিনি ৮১-তে, ৯৬-তে কামব্যাক করেছেন। ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে গিয়ে তিনি ২০০৯ সালে অপ্রতিরোধ্যভাবে ফিরে এসেছেন। আমি মনে করি, হাসিনা ফিরতে পারবেন আবার, তিনি হয়ত দিল্লি থেকে দল পরিচালনা করবেন। কিন্তু তার দল ফিরতে পারবে। তবে সেখানে সংকট হবে গণঅভূত্থানের ইতিহাসকে জাতীয় ইতিহাস, সাহিত্যকর্মের অংশ করে একটি আদর্শিক ভিত্তি তৈরি করলে। তাই আমরা ছাত্রদের বেশি সময় দিতে চাই না। ভারত মনে করছে, বিএনপি আমলে বরং আওয়ামী লীগ বেশি নিরাপদ থাকবে। বিএনপির নানা সংকট সামনে চলে আসলে, বিএনপি-জামায়াতের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব তৈরি হলে আওয়ামী লীগ একটা পলিটিকাল স্পেস পেতে পারে।


আসাম থেকে একজন বাংলাদেশ এক্সপার্ট কথা বলেছে দ্য মিরর এশিয়ার সাথে। তিনি বলেছেন, হাসিনা নর্থ ইস্টের সাথে ভারতের মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার যে কথা বলছিলেন, সে স্বপ্ন একেবারে ভেঙে গেছে। বিএনপি এ ক্ষেত্রে ভারতকে সহযোগিতা করবে না। নতুন রাজনৈতিক দল হবে অনেক বেশি তারুণ্য নির্ভর, তারা কূটনীতির চেয়ে রাজনৈতিক ভাষায় বেশি কথা বলবেন। এমনকি তাদের কিছু সিদ্ধান্ত সেভেন সিস্টারের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে আমরা মনে করছি।


ফলে এই মুহূর্তে ভারতের অগ্রাধিকার হলো- তরুণদের কোন দল গঠনের সুযোগ না দিয়ে বর্তমান সরকারকে নভেম্বরের মধ্যে হিযবুত তাহরির ও শিবির প্রভাবিত সরকার বলে একটা অস্থিরতা তৈরি করা। অন্যদিকে নির্বাচনের পরিবেশের কথা বলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে আওয়ামী লীগকে প্রকাশ্য রাজনীতিতে নিয়ে আসা, যেমনটা দ্য মিরর এশিয়ার সপ্তাহ ধরে চলা অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।


----------


The Mirror Asia

Courtesy : H M Khalid Hasan


একটা মারলে আর একটা সরে না



ইন্টারনেট বন্ধ করে শতশত মানুষ হত্যা


আয়না ঘর/কাজল সাংবাদিক


Pilkhana


আওয়ামী লীগের কু-পরিকল্পনা ক্লিক করুন। 


Sheik Mujib's Activities


Bongo Bondhu


নিচে ছাত্রলীগের কু-পরিকল্পনা।সঠিক কিনা জানিনা। 


১৮ জুল, ২০২৪

কোটা সম্পর্কে আমাদের

 


  অনেকের - ই ধারনা নেই ,!!!

তাই আসুন কোন চাকরিতে কত পার্সেন্ট কোটা

      তা জেনে নেওয়া যাক- !!! 


বিসিএসে কোটার বিন্যাসঃ

----------------------------------

মুক্তিযোদ্ধার কোটাঃ ৩০%

নারী কোটাঃ ১০%

জেলা কোটাঃ ১০%

উপজাতি কোটা ৫%

প্রতিবন্ধি কোটা ১%

-----------------------------

মোটঃ ৫৬% কোটা।


 বিসিএসে ৫৬% কোটা মানে 

প্রতি ১০০টি ক্যাডার পোস্টে

 সাধারণ মেধাবীদের থেকে

 চাকরি পায় ১০০-৫৬=৪৪ জন।


১ম ও ২য় শ্রেণী নন ক্যাডার 

জবে কোটার বিন্যাসঃ

----------------------

মুক্তিযোদ্ধার কোটাঃ ৩০%

নারী কোটাঃ ১৫%

জেলা কোটাঃ ১০%

উপজাতি কোটা ৫%

প্রতিবন্ধি কোটা ১%

-----------------------------

মোটঃ ৬১% কোটা 

 এখানে কোটাবিহীন সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরা পায় 

 ১০০-৬১=৩৯ টি পদ।


** ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর জবে কোটা ৭০% মাত্র

** রেলওয়েতে কোটা ৮২% মাত্র।


প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে কোটার বিন্যাসঃ

-----------------------------

নারী কোটা ৬০%,  now 0%

মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০%, now 5%

পোষ্য কোটা ৫%, ০%

 অনগ্রসর জাতি  now ১%

প্রতিবন্ধি কোটা ১%, now 1%

------------------------

মোটঃ ৯৬% কোটা, 

 এখানে ১০০টি পোস্ট থেকে সাধারণ মেধাবীরা চাকরি পায় মাত্র ৪টি পদে! 


(তথ্যে যদি কোন ভুল থাকে 

সংশোধন করে দেবেন প্লিজ)

চাকুরী কোটা সংস্কার ক্লিক করুন। 


নতুনভাবে কোটা সংস্কার :-

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬% কোটা বিদ্যমান ছিল। দীর্ঘদিন ধরেই মেধাকে গুরুত্ব না দিয়ে কোটা ব্যবস্থায় নিয়োগ চলছিল। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ৮০% পর্যন্ত কোটার ভিত্তিতে নিয়োগ চলতো। কোটা ব্যবস্থা এক রকম ৭% এ নামিয়ে এনে সরকারি এখন মেধাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে- নতুন কোটা প্রজ্ঞাপন জারি ২০২৪ 

কোটা মূলত কি? কোটা মূলত অনগ্রসর গোষ্ঠিকে এগিয়ে নেয়ার একটি মাধ্যম চাকরির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা রাখায় যাতে অনগ্রসর জনগোষ্ঠি তাদের জীবন যাপনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে না থাকে। এজন্য জেলা কোটা, নারী কোটা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু ছিল এবং এ কোটা ব্যবস্থা আন্দোলন সংগ্রামে তরুনদের জীবনের বিনিময়ে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে সরকার। কোর্টের রায়ের আলোকে কোটা ব্যবস্থাকে ৫৬% হতে কমিয়ে এখন ৭% এ আনা হয়েছে।

নতুন প্রজ্ঞাপনে কোটা ব্যবস্থা কেমন? সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সহ কর্পোরেশনগুলোতেও সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে ৯-২০ গ্রেডের সকল নিয়োগে ৭% কোটা অনুসরণ করা হবে এবং অবশিষ্টাংশ ৯৩% মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে। ৭% কোটার মধ্যে ৫% মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য রাখা হয়েছে এবং ১% প্রতিবন্ধী ও ৩য় লিঙ্গের মানুষদের জন্য এবং ১% ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য রাখা হয়েছে। এখানে নারী কোটা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের জন্য কোন কোটা রাখা হয়নি। নতুন কোটার প্রজ্ঞাপনের অনতিবিলম্বে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে অর্থাৎ চলতি মাসের ২৩ তারিখ হতে কার্যকর হবে। এখন কোটা সংক্রান্ত পূর্বের সকল আদেশ /পরিপত্র বা যে কোন আইন বাতিল বলে গন্য হবে।

চলমান নিয়োগগুলো কি নতুন পরিপত্র মোতাবেক হবে? না। যেহেতু নতুন আইন চলতি মাস হতে কার্যকর হয়েছে তাই পূর্বের চলমান নিয়োগ পূর্বের কোটা পদ্ধতি অনুসারেই চলবে। সার্কুলারে উল্লেখিত শতার্বলী অনুসারে চলমান বা পূর্বের নিয়োগ গুলো কার্যকর হবে। নতুন আইন নতুন সার্কুলার বা সরাসরি নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে কার্যকর হইবে। যে সকল নিয়োগের রেজাল্ট হয়নি সেগুলোও পূর্বের নিয়োগ বিধি এবং কোটা বিধি অনুসানেই কার্যকর হবে।

কোটা নিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি ২০২৪ । চলতি মাসের ২৩ তারিখ হতেই নতুন কোটা পদ্ধতি চালু হবে

নতুন কোটার প্রজ্ঞাপন ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। কোটা ব্যবস্থার কার্যকর হওয়া জরুরী ছিল যা রক্তাক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে।



শিক্ষার হার যত বেশি সেই জেলায় মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ বেশি পাবে। জেলা কোটা বাতিল হওয়ার ফলে পিছিয়ে থাকা জেলা হতে কম লোক নিয়োগ পাবে। সরকার চাইলে জেলা কোটা বা নারী কোটা যোগ করতে পারে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পরিবর্তন বা সংস্কার আনতে পারে। এটি যেহেতু পলিসি নির্ধারণীর বিষয় তাই এটি পক্ষে বা বিপক্ষে কোন আইন প্রয়োগ করা যাবে না।

মেধামুক্তিযোদ্ধার সন্তানমুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনীনারী কোটাজেলা কোটাক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীআনসার কোটা ও অন্যান্যপোষ্য কোটাপ্রতিবন্ধী ও হিজড়া
৯৩%৫%০%০%০%১%০%০%১%


Feartured Post

কর্মের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভর করে।

  কর্মের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভর করে।

জনপ্রিয় পোস্ট